জিপি নিউজঃ বিশ্বজিত দাস হত্যা মামলার বিচারিক আদালত আট জনকে ফাঁসি ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। এই বিচার মেনে নিয়েছিল বিশ্বজিতের পরিবার। তারা আশায় ছিল, উচ্চ আদালতে এই রায় অনুমোদনের পর দণ্ড কার্যকর হবে, তাতে তাদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্ত হবে। তাই শরীয়তপুরে তার বাড়িতে সকাল থেকেই অপেক্ষায় স্বজনরা। কিন্তু আশানুরুপ হল না তাদের তাদের আকাঙ্খা। ফাঁসির দণ্ড হওয়া আট জনের মধ্যে ছয় জনেরই এই সাজা হবে না, এটা মানতেই পারছে না কেউ। উচ্চ আদালতের রায়ের পর ভেঙে পড়েন অনন্ত দাস। বিশ্বজিতের স্বরণে তৈরি ভাস্কর্যের সামনে ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন মা কল্পনা রানী দাস।
বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া দুই জন খালাস হয়েছে, কেন চার জনের দণ্ড কমে যাবজ্জীবন হলো, সে প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে। বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত দাস বলেন, সারা দিন না খায়া, টেলিভিশনের সামনে বইসা ছিলাম রায় দেখার জন্য। কিন্তু এইটা কী রায় দেখলাম? সারা পৃথিবীর মানুষ দেখলো তারে কীভাবে কুপায়া মারছে, সেখানে কীভাবে দুই জনের ফাঁসি হয়। তাহলে বাকি আসামিদের কেন ফাঁসি হইল না। আমরা তো ন্যায়বিচার পাইলাম না।
‘তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছে দাবি থাকবে, তারা যেন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আগের রায় বহাল রাখার ব্যবস্থা করেন।
বিশ্বজিতের মা কল্পনা রানী দাস বলেন, এই রায় কেমনে হয়। আমার বিশ্বজিতরে কুপায়া মারল, সবাই দেখল। ভাবছিলাম সবার ফাঁসি হইব। কিন্তু হইল না। এই রায় কেমনে মানি?।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর সকালে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। ২১ আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আটজন কারাগারে আছেন। আসামিদের সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।