জিপি নিউজঃ বরগুনার বেতাগীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা গণধর্ষণের প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।
রাজধানীতে মানববন্ধন শেষে শিক্ষক নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে তার হাতে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতি আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং শিক্ষক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতি একই দাবিতে আজ রাজধানীসহ সারাদেশের উপজেলা চত্বরে ও উপজেলা শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেছে।
এসব মানববন্ধন শেষে ইউএনওর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন ও সাধারণ সম্পদক সাবেরা বেগমের নেতৃত্বে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
স্মারকলিপিতে শিক্ষিকা ধর্ষণের ঘটনা ও পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরা হয় এবং ঘটনার জন্য দায়ী ও অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাৎক্ষণিকভাবে জেলা পুলিশ সুপারের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন এবং দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বলে শিক্ষক নেতারা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং সারাদেশে উপজেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে ২৮ আগস্টের মধ্যে সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় পর দিন (২৯ আগস্ট) থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।
ঈদের পর আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দেন শিক্ষক নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট বরগুনার বেতাগী উপজেলায় একটি প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষিকা গণধর্ষণের শিকার হন। ছুটির পর স্বামীর সাথে কথা বলার সময় স্থানীয় বখাটেরা স্বামীকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রেখে ওই শিক্ষিকাকে অন্য কক্ষে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর রাতেই ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন ওই শিক্ষিকা।
মানববন্ধনে শিক্ষক নেতারা বলেন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত স্কুলে পাঠদান করি। এখন আমরা এতোটাই নিরাপত্তাহীন যে স্বামীকে শ্রেণিকক্ষে আটকে রেখে শিক্ষিকাকে গণধর্ষণ করা হয়। গণমাধ্যমে এসেছে বিভিন্ন প্রভাবে ধর্ষণের মেডিক্যাল রিপোর্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। শিক্ষক নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাবেরা বেগম, জয়শ্রী সাহা, লুৎফর রহমান শামিম, প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ, সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সভাপতি শাহিনুর আক্তার, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান, যুগ্মসম্পাদক আব্দুল হক, সমন্বয়ক আতাউর রহমান প্রমুখ।