প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বিস্তারিত জানতে : ০১৬৭৬৩৬৯৪১৫
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | খেলাধুলা | বিনোদন | রাজনীতি | লাইফ স্টাইল | শিক্ষাঙ্গন | অর্থ বানিজ্য | আইন আদালত | আবহাওয়ার নিউজ | ইতিহাস ঐতিহ্য | এক্সক্লুসিভ নিউজ | কৃষি সংবাদ | চাকরির খবর | সারাদেশ | সাহিত্য সংস্কৃতি | স্মৃতিতে অম্লান | জীবন ও দর্শন | বিজ্ঞান প্রযুক্তি

আফ্রিকার যে শহরটি ইসলামের ‘চতুর্থ পবিত্রতম’ শহর

আপডেট : July, 23, 2017, 10:22 am

জিপি নিউজঃ শত মসজিদ আর মাজারের শহর হারারকে ইসলাম ধর্মের চতুর্থ পবিত্রতম শহর হিসেবে বিবেচনা করেন অনেকে।

আবার শিল্প সংস্কৃতি চর্চা আর পুরোনো ঐতিহ্য লালনের কারণে কেউ কেউ শহরটিকে অভিহিত করেন জীবন্ত জাদুঘর হিসেবেও।

খরা আর দারিদ্রের কারণে ইথিওপিয়া যখন প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবরের বিষয় হচ্ছে, তখন এই হারার শহরটি অনন্যতা পেয়েছে ভিন্ন ধর্মী সব কারণে।

হারার এমন একটি শহর, যেটিকে নানা নামে ডাকা হয় – কেউ এটাকে ডাকেন সন্তুদের শহর, কেউবা ডাকেন শান্তির শহর, কেউ কেউ এটাকে অভিহিত করেন জীবন্ত জাদুঘর বলে।

শহরটির ঠিক বাইরেই যে বিরাট পাথুরে দেয়ালটি রয়েছে, সেটি তের থেকে ষোল শতকের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে তৈরি।

এটিকে কেন অনেকেই মক্কা, মদীনা ও জেরুজালেমের পর ইসলাম ধর্মের চতুর্থ পবিত্রতম শহর বলে বিবেচনা করেন, সেটা অনুমান করাও হয়তো কঠিন না।

হারারে পিচ সিটি

হারারে শান্তির শহর

হারারের রাস্তা আর সরু অলিগলিগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মসজিদ আর মাজার। সংখ্যায় একশো’র কম হবে না।

শতকের পর শতক ধরে শহরটি ইসলামিক পণ্ডিতদের একটি মিলনমেলা আর আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। আর শহরের বড় বড় বাজারগুলোতে চোখে পড়ে মহিলারা রংবেরংয়ের কাপড় আর মসলার পসরা সাজিয়ে বসেছেন।

সুপ্রাচীনকাল থেকেই হারারের সাথে বাণিজ্য চলে আসছে হর্ন অব আফ্রিকার, মধ্যপ্রাচ্যের, ভারতের – এমনকি চীনেরও।

একজন স্থানীয় ঐতিহাসিক আবদুলসালাম ইদরিস বলেন, হারারের রয়েছে সাত হাজার বছরের ইতিহাস। এই নগরের গোড়াপত্তন করেন হারলা জনগোষ্ঠী, এরা মূলত এসেছেন সোমালি এলাকা থেকে।

এই শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটক আকর্ষণ হচ্ছে হারার জাদুঘর, এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিখ্যাত ফরাসি কবি আর্থার রাম্‌বু, যিনি একসময় হারারে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবাদে বসবাস করতেন।

হারারে জাদুঘর

হারারে জাদুঘর

জাদুঘরটির ভেতরে একটি গ্যালারি রয়েছে ছবিতে বোঝাই, যেগুলো পর্যটকদেরকে পুরনো দিনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

ছবিগুলোর বেশীরভাগই সাদাকালো, কিছু একেবারে উনিশ শতকের গোঁড়ার দিকের। এখানে ছবি রয়েছে জাদুঘর প্রতিষ্ঠাতার, শহরের বিভিন্ন নেতাদের, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার, বাজারের এমনকি মসজিদ এবং গির্জারও।

সায়ো আদুস জন্মেছেন হারার শহরে, তবে বসবাস করেন বিদেশে।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে এই শহরের মতো আর কোন জায়গা আছে, মনেই হয় না আমার। এখানে এসে আমি সত্যিকারের একটি পারিবারিক বন্ধনের অনুভূতি পাই, যা এই শতকে খুবই বিরল একটি ব্যাপার।

“এখানকার সবকিছুই অপরিবর্তিত, আগের মতোই রাখা হয়েছে। এখানে সেই পুরনো দেয়াল, সরু পাথুরে রাস্তা, সবই আগের মতোই। যদিও শহর বাড়ছে, কিন্তু পুরনো কিছুই এখানে বদলে ফেলার চেষ্টা নেই – যেটা আমি খুবই পছন্দ করি।”

যখন রাত্রি নামে তখন দেখা যায় শহরটির আরেকটি দারুণ ব্যাপার।

বুনো হায়েনাদের খাবার খাওয়াচ্ছেন হারারের বাসিন্দারা

এই শহরের বাসিন্দারা প্রাচীনকাল থেকেই বংশপরম্পরায় রাতের বেলা বুনো হায়েনাদের খাবার খাওয়ায়।

এক রাতে দেখা যায়, শহরটির একটি খোলা প্রান্তরে কমলা শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি প্রান্তরটির এক কোনায় গিয়ে বসেছেন। তার হাতে মাংসভর্তি একটি ঝুড়ি। তিনি হায়েনাদের ডাকছেন।

এক পর্যায়ে দুটো হায়েনা এগিয়ে এলো ৩২ বছরের বিনিয়াম আশেনাফির দিকে। তিনি হায়েনাদের দিকে মাংস ছুড়তে শুরু করলেন। আশেপাশে আরও দশটির মতো হায়েনা তখন সেখানে জড়ো হয়েছে।

বেশ ভীতিকর একটা ব্যাপার।

বিনিয়াম আশেনাফিকে জিজ্ঞেস করা হলো, হায়েনাদের খাবার দেয়া তার কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর জবাব: “আমি এটা করি কারণ আমি পশুদের পছন্দ করি। এই প্রাণীরা আবর্জনা খেয়ে আমাদের বিরাট উপকার করে। আর তারা তো স্থানীয়দের উপর কোন হামলা চালায় না।”

হারার শহরের প্রাচীন অংশটি পরিচিত হারার জুগল নামে, যেটির গোড়াপত্তন ঘটেছিল ১০১০ বছর আগে।

পাথুরে সরু রাস্তা – যা প্রমাণ করছে শতশত বছরে খুব সামান্যই পরিবর্তন এসেছে হারার শহরে

এটি প্রাচীর বেষ্টিত। এখানকার স্থানীয়রা দাবি করেন, এই অঞ্চলের মানুষেরা এমনকি মদীনার বাসিন্দাদেরও আট বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

বলা হয়, নবী মুহাম্মদের অনুসারীরা ষষ্ঠ শতাব্দীতে মক্কায় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে এখনকার এই ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়া অঞ্চলে পালিয়ে আসেন।

“হারার এবং হারলা জনগোষ্ঠী ৭,০০০ বছরের পুরোনো। তবে মূল শহরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এক সহস্র এক দশক আগে,” বলছেন মি. আবদুলসামাদ।

ষোড়শ শতকে ৪০ বছরেরও বেশী সময় এটি হারারি রাজ্যের রাজধানী ছিল, তবে ১৮৮৭ সালে তা ইথিওপিয়ার অংশ হয়ে যায়।

হারার শহর তার ঐতিহ্যের বেশীরভাগটাই ধরে রেখেছে – এর সমৃদ্ধশালী মুসলিম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এখনও বহমান। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো বিষয়টিকে একটি ‘বিরল উদাহরণ’ হিসেবে দেখছে।

সে কারণে স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, শিল্প সংস্কৃতির বাতিঘর আর ধর্মীয় সম্প্রীতির লীলাভূমি হিসেবে আফ্রিকা মহাদেশের জন্য হারার শহরের দেয়ার আরও অনেক কিছুই আছে।

সুত্র – বিবিসি

 

Facebook Comments
Share Button

সম্পাদক- ডাঃ মো: মেহেদী হাসান সূইট, যুগ্ম-সম্পাদক- মোঃ আলিউল হক পলাশ, নির্বাহী সম্পাদক : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রতিবেদক- মোঃ জাবের ইবনে হায়াত খান
জিপি নিউজ২৪ ডট কম, ৮৭, পল্টন টাউয়ার, লেবেল-৮, পুরানা পল্টন লাইন, ঢাকা-১০০০ কর্তৃক প্রকাশিত
মোবাইল : ০১৭১৯-৪৭৭১১৩, নিউজ : ০১৭১১-০৫৬৫৭২, ০১৬৭৬৩৬৯৪১৫
Email : gias.gpnews24@gmail.com

Desing & Developed BY ThemesBazar.Com

শিরোনাম :
★★ রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সাড়ে ৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা জাপানের ★★ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ ★★ জিয়া পরিষদের ‘ডেসকো’ শাখা কমিটি অনুমোদন ★★ জিয়া পরিষদ জীবন বীমা কর্পোরেশন শাখা কমিটি অনুমোদন ★★ মেয়র তাপসের প্রতিহিংসার স্বীকার ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের যে দাবী ★★ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলা হাইকোর্টে বাতিল ★★ বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে ★★ পুলিশের সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিন হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে ★★ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম ★★ জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের ২৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা